রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রতারণাকারী ৪ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব ১০।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরনের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, অস্ত্রধারী অপরাধী, মাদক, ছিনতাইকারীসহ ডাকাতির বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে আসছে। এছাড়া প্রতারণা ও জালিয়াতি দমন র্যাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং চলমান অভিযান। র্যাবের এই অভিযান দেশের সব মহলেই প্রশংসিত হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল ২১ ডিসেম্বর তারিখ রাতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন ছনটেক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভুয়া ডিবি পরিচয় দিয়ে প্রতারক চক্রের ৪ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রবিউল হাসান (২৮), ফয়সাল আহম্মেদ রানা (৩৪), জেসমিন বেগম রিনা (৩০), এবং পুতুল (২৮)। অভিযান চলার সময় তাদের কাছ থেকে ১টি ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ১টি ওয়াকিটকি সেট, ১টি হাতুড়ি, ১টি লাঠি, ১টি প্লাস, ১টি মাল্টিপ্লাগ এবং ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ২১ ডিসেম্বর রাতে ছালাম সিকদার (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দিয়ে পূর্বপরিকল্পিভাবে নিজেদের সুবিধাজনক স্থান রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন ছনটেক এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে যায় প্রতারক জেসমিন বেগম রিনা। ছালাম সিকদার ওই বাড়িতে গেলে দলনেতা রানাকে খবর দেয় রিনা। পরবর্তীতে রানা তার দলবল নিয়ে ডিবি পুলিশ সেজে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম ছালামকে মারধর ও আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এরপর ভিকটিমকে গ্রেফতার ও মামলার ভয় দেখিয়ে তার কাছে ৫০,০০০ টাকা দাবি করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল ছনটেক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধার ও ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় প্রদানকারী প্রতারক চক্রটিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্তার সত্যতা স্বীকার করে জানায়, তারা একটি প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের দলের মেয়েরা রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় অর্থ-বিত্তশালী বিভিন ব্যক্তিদের অনৈতিক কাজের লোভ দেখিয়ে তাদের পরিকল্পিত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে তাদের দলনেতা রানাকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে রানা ও তার সহযোগীরা ডিবি পুলিশের জ্যাকেট পরে ওয়াকিটকি সেটসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমদের মারধর ও মোবাইলের মাধ্যমে তাদের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করত। পরবর্তীতে ভিকটিমদের গ্রেফতার ও মামলাসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অংকের দাবিকৃত টাকা আদায় করত।
এছাড়াও গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে ৪টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।